ক্রেডিট কার্ডে অনিয়ম, ২৭ ব্যাংকে নোটিশ!

২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক পণ্য কেনাকাটায় কার্ড ব্যবহারকারী গ্রাহককে ডলার খরচে সীমা বেঁধে দিলেও ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকরা মানছেন না সেই সীমারেখা। এমন অভিযোগেই ২৭ ব্যাংক’কে আজ কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই সূত্র ধরে সেইসব ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠিও দেয়া হয়েছে। জবাব দিতে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরও জানান, ৭১টি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার সীমাতিরিক্ত এই ব্যয় করা হয়েছে। এই অভিযোগের আওতায় পড়েছে দেশি-বিদেশি প্রায় ২৭টি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশেষ পরিদর্শনে সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ পায়। উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালে প্রকাশিত হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া খেলা, বৈদেশিক লেনদেন, বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কেনাবেচা, ক্রিপ্টো কারেন্সি কিংবা লটারির টিকিট কেনার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আরও বলা হয়, কার্ডে কী ধরনের লেনদেন হচ্ছে, গ্রাহকদের তারও হিসাব দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশকে ১৫শ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক
এছাড়াও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গ্রাহকদের অনলাইন ট্রানজেকশন অথরাইজেশন ফরম বা ওটিএএফ পূরণ করে ব্যাংকগুলোতে জমা দিতে হবে। তারপর ব্যাংক সেটি যাচাই-বাছাই করে কোনো অসংগতি না পেলেই কেবলমাত্র গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ডের ওই ডলার ব্যবহারের অনুমতি পাবেন এবং ক্রয়কালীন লেনদেনের ক্ষেত্রে যদি কর বা শুল্ক প্রযোজ্য হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডধারী ব্যক্তিকে তা পরিশোধ করতে হবে।
অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে যে, এসব কার্ডের মাধ্যমে ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত খরচ করা হয়েছে । অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, যা বছরে কোনো অবস্থাতেই এক হাজার ডলারের বেশি হওয়া যাবে না। সেটাও শুধুমাত্র বিদেশ থেকে বৈধ পণ্য ও সেবা কেনার ক্ষেত্রে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি প্রতি বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করার এখতিয়ার রাখেন না। বিশেষ ক্ষেত্রে যা ৫০০ ডলার পর্যন্ত বেশি হতে পারে।
সুযোগ-সুবিধা ভোগের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের এই স্বেচ্ছাচারিতা এবং তাতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ভূমিকা সচেতন মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপ এবং তার কার্যকারিতার প্রত্যাশায় আছেন সুধীজনেরা।