ভারতীয় বন্দরে আটকা পড়েছে ১০ লাখ টন চাল!

নতুন আইনে ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে রাজি না হওয়ায় ভারতীয় বন্দরগুলোতে আটকা পড়েছে প্রায় ১০ লাখ টন চাল। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্যমতে, পাঁচজন রপ্তানিকারক জানিয়েছেন, ক্রেতারা চুক্তিতে নির্ধারিত দামের বাইরে কোনো শুল্ক দিতে না চাওয়ায় বন্দর থেকে জাহাজে কোনো চাল ওঠেনি।
গত বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ধরনের চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি ভাঙা চাল বা খুদ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। মূলত, নিজেদের বাজারে চালের যোগান বাড়াতে এবং দাম স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে রপ্তানি শুল্কের তালিকা থেকে সিদ্ধ ও বাসমতি চাল বাদ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
অল ইন্ডিয়া রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এআইআরইএ) সভাপতি বিভি কৃষ্ণ রাও জানান, “মাঝরাত থেকে শুল্ক কার্যকর হয়, কিন্তু ক্রেতারা তা দিতে প্রস্তুত নয়। আমরা জাহাজে চাল ওঠানো বন্ধ রেখেছি।”
আরও পড়ুন: হুন্ডিতে এক বছরে পাচার ৭৫ হাজার কোটি টাকা!
প্রতি মাসে প্রায় ২০ লাখ টন চাল রপ্তানি করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত। কাকিনাদা এবং অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তমের মতো পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরগুলো থেকে আসে সবচেয়ে বড় চালানগুলো।
ভারতের সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সত্যম বালাজির নির্বাহী পরিচালক হিমাংশু আগারওয়াল জানান, সরকারের নীতি পরিবর্তনের তারিখের আগে ঋণপত্র (এলসি) কিংবা আমদানির বিপরীতে অর্থ পরিশোধের চুক্তিগুলো বাড়তি শুল্কের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিল।
কিন্তু এবার ব্যতিক্রম হয়েছে উল্লেখ করে হিমাংশু আগারওয়াল বলেন, “চালের ব্যবসায় লাভ খুবই সামান্য এবং রপ্তানিকারকদের বাড়তি ২০ শতাংশ শুল্ক দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এরই মধ্যে যেসব এলসি ইস্যু করা হয়েছে সরকারের উচিত তার বিপরীতে রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া।”
আরও পড়ুন: আরও বাড়ছে ডিম, মুরগি, আলুর দাম!
তিনি আরও বলেন, চলতি বছর গম রপ্তানিতে যখন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তখন আগে থেকে যেসব এলসি ইস্যু করা হয়েছিল তাদের রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল নয়াদিল্লি।
এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, শুক্রবার থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর করায় বন্দরগুলোতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টন সাদা চাল পড়ে আছে।
রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, খুদ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির আগে শুল্ক বিভাগে যেসব চালান পৌঁছেছে কিংবা বৃহস্পতিবারের আগে যেসব জাহাজ বন্দরে ভিড়েছে তাদের খুদের চাল নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে ভারত।
খুদের চাল আফ্রিকার কিছু দরিদ্র দেশ মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণে আমদানি করে। তবে মূলত হাঁস-মুরগি বা মাছের খাবার তৈরিতে বেশি ব্যবহার করা হয় এই ভাঙা চাল।