ফিচার

পবিত্র মাহে রমজান কড়া নাড়ছে মুমিনের দুয়ারে, এখনই জেনে নিন রোজার আগে, কি কি প্রস্তুতি নিতেন রাসূল সাঃ

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা/সাওম হচ্ছে তৃতীয় স্তম্ভ। রমজান ফরজ হয় দ্বিতীয় হিজরি (৬২৪ খ্রিঃ) শাবান মাসে রোজা শব্দটি ফারসি। এর আরবি পরিভাষা হচ্ছে সওম, বহুবচনে বলা হয় সিয়াম। সওম অর্থ বিরত থাকা, পরিত্যাগ করা। পরিভাষায় সওম হলো আল্লাহর সন্তুটি কামনায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়তসহকারে পানাহার থেকে বিরত থাকা।সাওম শব্দটি বাংলা, ফারসি, উর্দু, হিন্দি ভাষায় রোজা হিসেবে ব্যবহার হয়।

বর্ষ দিনপঞ্জির আরবি শাবান মাসের চাঁদ ডোবার পর পশ্চিম আকাশে দেখা দেয় রমজান মাসের চাঁদ। নিয়ে আসে গোটা মুসলিম জাতির জন্য রহমত, মাগফিরাত, এবং নাজাত। এ গুরুত্বপূর্ণ মাসের আগমন গোটা মুসলিম জাতির দীর্ঘ এক মাসের রোজা পালনের জন্য শেষ ভাবে প্রস্তুতি হওয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়। মুসলিম জাতির জীবনে সারা বছরের রমজান মাসে আল্লাহর অসীম দয়া, মায়া, ও পাপ মোচন বিশাল বড় সুযোগ সৃষ্টি হয় বলেই এ মাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা এত বেশি। বলা যায়, রমজান মাস কোন কাজ করার নয়। রমজান মাস হচ্ছে ইবাদত, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির করার মাস। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা মুসলমানের দায়িত্ব কর্তব্য।

আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক বিশেষ মৌসুম হচ্ছে রমজান মাস। মাহে রমজান এমন একটি বরকত কয় মাস যার আগমনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সাহাবায়েদের সুসংবাদ প্রদান করেছেন, তোমাদের সামনে রমজানের পবিত্র মাস এসেছে, যে মাসে আল্লাহ তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করেছেন। (মুসলিম) অন্য একটি হাদিসে এসেছে, যখন রমজান মাসের আসতো তখন আল্লাহর রাসূল (সা.) অনেক বেশি খুশি হতেন এবং সাহাবাদেরকে ডেকে বলতেন তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে।

এ মাসে আকাশের দরজা সমূহ খুলে দেওয়া হয়, বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো,অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করে রাখা হয়, এ মাসে রয়েছে একটি মাস যা হাজার রাতের চেয়েও উত্তম। (নাসায়ি-২১০৫)। রমজান নিয়ে মহা নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অনেক কথা বলেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, রমজানের মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সিয়াম বা রোজা পালন করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ!

আরো পড়ুন: আগামী ২৩ মার্চ হতে পারে রমজানের প্রথম রোজা

তোমাদের পূর্ববতী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও সিয়ামকে অপরিহার্য কর্তব্য রূপে নির্ধারণ করা হল যেন তোমরা সংযমশীল হতে পারো। (বাকারা-১৮৩)।রমজান মাসে বেশি বেশি দান করতে হয়। যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আছে তাদের যাকাত দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন শাবান মাসে উপনীত হতেন, তখন মাহে রমজানকে স্বাগত জানানোর উদ্দেশ্যে আবেগভরে আল্লাহর দরবারে এ প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রজব ও শাবান মাসের বিশেষ বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিন।

(মুসনাদে আহমাদ) তাই মাহে রমজানের অসীম কল্যাণ ও বরকত লাভের প্রত্যাশার জন্য দৈহিক ও মানসিকভাবে ইবাদতের প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, নফল ইবাদত, জিকর-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-ইস্তেগফার, দান-সাদকা করে বিপদগ্রস্ত অসহায় মানুষকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করতে সচেষ্ট হন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত প্রদান করে এবং যারা প্রতিশ্রুতি সম্পাদনকারী এবং অর্থসংকটে দুঃখ-ক্লেশে ও সংগ্রাম-সংকটের সময় ধৈর্যধারণকারী, তারাই হলো সত্যপরায়ণ এবং এরাই মুত্তাকি।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৭৭)

বাংলাদেশের এবং বিশ্বের সকল খবর সবার আগে জানতে অনুলিপির সাথেই থাকুন।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।