বিজ্ঞানবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

টমাস আলভা এডিসন: একজন আবিষ্কারের মেশিন!

এই যে আমরা বৈদ্যুতিক বাতি বা বাল্ব, গ্রামোফোন, টেলিগ্রাফ, ভিডিও ক্যামেরা দেখি; এগুলো তো এমনি এমনি হয়নি! এর একজন আবিষ্কারক তো আছে। কিন্তু সে কে! বলছি একজন আবিষ্কারের মেশিন খ্যাত টমাস আলভা এডিসের কথা। যার অসংখ্য সফল আবিষ্কার আমাদের দিনকে করেছে সহজ ও সুন্দর। আজকে আমরা জানব, টমাস আলভা এডিনের জীবনী সম্পর্কে।

•জন্ম: ১৮৪৭ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি মিলান ওহাইও তে জন্মগ্রহণ করেন টমাস আলভা এডিসন বা টমাস এডিসন। তিনি ছিলেন স্যামুয়েল ওগডেন এডিসন (পিতা) ও ন্যান্সি ম্যাথিউজ এলিয়টের (মাতা) সাত সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। টমাস আলভা এডিসন মিলান ওহাইওতে জন্মগ্রহণ করলেও তার বড়ো হবার গল্পটা মিশিগানের পোর্ট হুরনে। কেননা, তার পরিবার ১৮৫৪ সালে মিলান ছেড়েছিলো, আর বসতি গড়েছিল মিশিগানে।

•শিক্ষাজীবন: টমাস এডিসনের প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রধান ধাপগুলো তিনি তার মা ন্যান্সি ম্যাথিউজের উৎসাহ ও প্রচেষ্টায় পেয়েছিলেন। তার পড়াশোনা, লেখালেখি ও পাটিগনি, ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা লাভের জন্য তার মা একজন শিক্ষক রেখেছিলেন। যদিও টমাস বিদ্যালয়ের আঙিনায় মাত্র কয়েক মাস শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন।

তার শেখার প্রতি আগ্রহ নিজে থেকেই হয়েছিল এবং তিনি নিজেই তার একজন শিক্ষক। বেশিরভাগ বিষয় নিজে পড়েই শিখেছিলেন এবং বাল্যকালেই তিনি প্রযুক্তিতে আনন্দ খুঁজে পান। তাই ঘরে বসেই প্রতিনিয়ত তিনি দিনের অনেকটা সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যয় করতেন।

এতো চঞ্চল এক বালকের জীবনে আধার আসে ১২ বছর বয়স। তিনি এক সমস্যার মুখোমুখি হোন। মূলত তার লাল-জ্বর হয়, এবং চিকিৎসার অভাবে তা তার এক কান বধির করে দেয়। তবে অন্য কানে তিনি সব শুনতে পেতেন। তার এই এক কানে শোনার বিষয়ে তিনি অনেক কল্পকাহিনী সৃষ্টি করেছিলেন। এছাড়াও প্রচলিত আছে তিনি পিয়ানো বা কোনো সুর শুনতে তার দাঁত কাঠের মধ্যে চেপে কাঠের মধ্যের শব্দ তরঙ্গকে শোষিত করতেন তার করোটির মাঝে। যদিও এর যথেষ্ট প্রমাণ নেই।

কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে তিনি তার শ্রবণশক্তি হারানোর ক্ষোভ ভুলে নতুন করে কাজে মনোযোগী হোন। তারই ধারাবাহিকতায়, ১৮৭৫ সালে যখন তার ২৮ বছর বয়স তখন তিনি দ্য কপার ইউনিয়ন অব দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সাইন্স এন্ড আর্টে রসায়ন কোর্সে অধ্যায়ন করতে শুরু করেন। যেটা ছিল চার বছর মেয়াদি একটি কোর্স।

•পেশা: টমাস আলভা এডিসন পেশায় ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী, আবিষ্কারক ও বিজ্ঞান। তার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল পোর্ট হুরন হতে ডেট্রয়েট অবধি ট্রেনে ট্রেনে ক্যান্ডি, সংবাদপত্র ও বিভিন্ন শাকসবজি বিক্রি করার মধ্য দিয়ে এবং তিনি প্রতি সপ্তাহে মাত্র ১৩ বছর বয়সেই ৫০ডলার আয় করতেন। যদিও তার অধিকাংশ ডলারই খরচ করতেন তার আদিম নেশা আবিষ্কারের সরঞ্জাম কেনার পেছনে।

একদিন তিনি তিন বছর বয়সী জিমি নামক একটি বাচ্চাকে ট্রেনের ধাক্কা হতে বাঁচান। তাই জিমির বাবা কৃতজ্ঞ হয়ে টমাস এডিসনকে টেলিগ্রাফ অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেন এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। তখন জিমির বাবা ছিল মিশিগনের মাউন্ট ক্লেম্যানসের স্টেশন এজেন্ট।

টমাসের প্রথম টেলিগ্রাম অপারেটর হিসাবে কাজ শুরু হয় পোর্ট হুরন হতে দূরে গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রেলওয়ের অন্টারিওর স্ট্রাটফোর্ড জংশনে। এছাড়াও তাকে নেয়ার কলিজিওন হিসাবেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছি। এরই পাশাপাশি টমাস গুনগত বিশ্লেষণের ওপর পড়াশুনা চালিয়েছেন এবং তার সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা তিনি ট্রেনেই করতেন, যতদিন না তিনি এই চাকরি ছাড়েন।

টমাস রাস্তায় সংবাদপত্র বিক্রির জন্য একচেটিয়া অধিকারও পেয়েছিল। এছাড়াও তার চারজন সহযোগী সমেত তিনি টাইপ করে গ্রান্ড ট্রাঙ্ক হেরাল্ড মুদ্রণ করেন। যেটা আবার তিনি তার কাগজপত্রের সঙ্গে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। মূলত এর মাধ্যমেই টনাসের সুদীর্ঘ পথচলা ও উদ্যোগ নেওয়ার যাত্রা শুরু হয় এবং একজন সফল ব্যবসায়ীয় তকমাও তখন তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন তার এই তুখোড় প্রতিভোর জোরেই পরবর্তীতে তিনি জেনারেল ইলেকট্রিক সহ আরও প্রায় ১৪ টি সংস্থার সন্ধান পেয়েছিলেন; যা বিশ্বের বৃহত্তর প্রকাশ্য ব্যবসায়ের সংস্থাগুলোর একটি।

১৮৬৬ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি লুভলে চলে যান এবং সেখানে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের একজন কর্মচারী হিসাবে যোগ হোন। এছাড়া তিনি সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস ব্যুরোতেও কাজ করছিল। আর এইখানে তিনি নাইট শিফটের জন্য আবেদন করেন, কেননা তার দরকার ছিল পর্যাপ্ত সময় যাতে তিনি পড়া, পরীক্ষা চালিয়ে নিতে পারেন।

১৮৬৭ সালের এক রাতে ঘটল এক বিপদ। তিনি অফিসের ফ্লোরে স্যালফিউরিক অ্যাসিড ছড়িয়ে একটি সীসা-অ্যাসিড ব্যাটারি নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু এই সালফিউরিক এসিড ফ্লোরবোর্ডের মধ্যে ও নিচে চলে যায় এবং টমাসের বসের ডেস্কের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে পরের দিন সকালে টনামকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল।

তারপর ১৮৬৯ সালের ১ জুন অনুমোদিত হয় তার প্রথম মার্কিন পেটেন্ট ৯০,৬৪৬ বৈদ্যুতিক ভোট রেকর্ডারের। এঈ যন্ত্রের ওপর তার আর্কষণের জন্য তিনি নিয় ইয়র্ক সিটিতে স্থানান্তরিত হোন এবং সেখানে প্রথম বছরগুল্যতে তার পুরামর্শদাতা ছিল ফ্রাংকলিন লিওনার্ড পোপ নামক এক ব্যক্তি। পোপ ছিলেন একজন উদ্ভাবক ও সহযোদ্ধাও বটে।

এরপর,১৮৬৯ সালের অক্টোবরে পোপ ও এডিসন নিজেদের একটি কোম্পানি খুলেন। এছাড়াও তারা তড়িৎ প্রকৌশলী ও উদ্ভবক হিসাবে কাজ করেন৷ ১৮৭৪ সালে এডিসন মাল্টিপুল টেলিগ্রাফিক সিস্টেম বিকাশ করেছিলেন যেটা এক সাথে দুটি বার্তা প্রেরণ করে।

•আবিষ্কারের গল্প:
*টেলিগ্রাফ- টমাস এডিসন মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন ধারার টেলিগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করেন। যার মাধ্যমে এক সথে অনেকগুলো সংকেত পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু, তিনি এই ব্যাপারটা আড়ালে রাখলেন, কার তিনি দারিদ্রিতার কবলে ছিল ক্লান্ত ও জর্জরিত। তিন তার এই অসম্ভব আবিষ্কারটি বিক্রি করে দারিদ্রতা ঘোচাতে চাইলেন,করলেন ও তাই। তিনি আমেরিকান কোম্পনি ‘গোল্ড ইনডিকেটর টেলিগ্রাফ’ কে তা এই নতুন টেকিগ্রাফের ধারনা বিক্রি করলেম ৪০ হাজার ডলারে। তখন এই ৪০ হাজার ডলারের মূল্য অনেক বেশি ছিল। পরবর্তীতে তিনি এই ডলার দিয়ে মেনলো পার্কে নিজের একটা কোম্পানি চালু করেন এবং সেখানে টেলগ্রমের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি করতেন। তার কারখানায় তখন প্রায় ১০০ এর বেশি শ্রমিক ছিল।

*ফোনোগ্রাফ- টমাস এডিসন হয়তো বিরাট শিল্পপতি হতে পারতেন। কিন্তু তার আবিষ্কারের আদিম নেশা তাকে প্রতিনিয়ত পিছু করতো। পাগল এডিসন একদিন জনাসমাবেশ ডেকে বসলেন এক আশ্চর্যজনক আবিষ্কা দেখাতে। স্টেজের ওপর তিনি দাঁড় করালেন একটি হাতাওয়ালা টিনের সিলিন্ডার এবং তার ওপর ছিল সরু পিন। পিনের সাথে আটকানো একটি ধাতব চোঙা।

হুট করে হাতলটাকে ঘুরাতে শুরু করলেম আর গান গাইতে লাগলেন— ‘মেরি হ্যাড এ লিটল ল্যাম্ব’। সবাই তো পাগলের পাগলামি দেখতে লাগলো। কিন্তু টমাস গান শেষ করেই দুইটি তার নতুন করে যুক্ত করে দিলেন একটি ব্যাটারির সাথে। এরপরে আবার হাতলটা ঘুরাতে লাগলেন। তখনই সবাইকে অবাক করে চোঙার ভেতর থেকে প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো টমাসের গাওয়া সেই গান ও সুর। সবাই বিস্ময়ে ও খুশিতে হাততালি দিতে লাগলো। তারা ভাবল এটা একটা চমৎকার ম্যাজিক। কিন্তু, টমাস তাদের বার বার বলেও কিছুই বুঝাতে পারছিল না। এটা বিজ্ঞান এটা কেউ মানছিম না। তবে এই যন্ত্রটারই আধুনিক রূপ গ্রামোফোন, যা ছিল এডিসনের কাছে ফোনোগ্রাফ।

তবে টেলিগ্রাফের নতুন পদ্ধতির তার ফোনোগ্রাফ আবিষকার নয়। এছাড়ও এর মধ্যে তিনি প্রায় ১২০ টি নতুন আবিষ্কারের ধারনা করেন এবং আবিষ্কার করেন। কিন্তু তা খুব একটা যুগান্তকারী আবিষ্কার হিসাবে গণ্য হয় ন। তবুও টমাসের ওইসব আবিষ্কারে সৃজনশীলতার ছাপ রয়েছে। আর ১৮৭৭ সালে নতুন ফোনোগ্রফ আবিষ্কার করেছিলন তিনি যেটা এত অল্প বয়সে অন্য কোনো কেউ করতে পারেনি, পারেনি খ্যাতিমান বিজ্ঞানী হতে। যা তিনি পেরেছিলেন।

*বৈদ্যুতিক আলো বা বাল্ব- টমাসের সকল আবিষ্কারকে পেছনে ফেলে এই বৈদ্যুতিক বাতি বা বাল্ব আবিষ্কার। মানব সভ্যতায় যার অবদান কখনো শেষ হবে না।

তিনি ১৮৭৮ সালে বৈদ্যুতিক আলো আবিষ্কারের বিষয় উদ্যত হোন। তিনি বজ্রপাত হবার সময়কার বিদ্যুতের ঝলকানি থেকেই এই আইডিয়া পেয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, পৃথিবীতে কৃত্রিমভাবে তৈরি করবেন এই বিদ্যুতের আলো। কেননা, তখনো রাস্তাঘাটে গ্যাসের আলো জ্বলত, বাড়িতে মোমের আলো।

কিন্তু এর সঠিক সমাধান পেতে তার বেশ বেগ পেতে হলো। এরপর তার মাথায় আসলো এমন জিনিস খুঁজে বের করতে হবে যার ভেতর বিদ্যু প্রবাহ গেলে গরম ও উজ্জ্বল হয়ে ওঠবেন। তিনি শুরু করেন কাজ। তার হাতের কাছে যা পেতেন তাই দিয়েই শুরু করতেন পরীক্ষা। ব্যাটারির দুইপ্রান্তে জুড়ে দিতেন।

এরি প্রেক্ষিতে একদিন প্রথমে তামার তারে কাগজ জড়িয়ে দিলেন। দেখলেন, কাগজটা গরম হয়ে ওঠছে; তবে সেই কাগজ একটু পরে আগুনে পুড়ে গেল।

এরপরে, তিনি নরম ধাতু নিয়ে পরীক্ষা করলেন। তবে, ধাতুগুলো উজ্জ্বল হলেও কিছুক্ষণের মধ্যে তা গলে গেল । তিনি ব্যর্থ হলেন, তবে হতাশ হননি।

এরপরে, তার মনে হলো, আরে দহনে তো বাতাসের অক্সিজেন সহায়তা করছে। এই অক্সিজেনের কথা মাথায় আসতেই তিনি একটি কাঁচ নিলেন এবং তার বাতাস যতটুকু সম্ভব বের করে দিলেন। হ্যাঁ, এই ধারনাই টিকে গেল। সেই ধাতব ফিলামেন্টটি জ্বলে ওঠলো, থাকলো দশ মিনিট ধরে। কিন্তু সমস্যা যেন পিছু ছাড়ছেই না।তবে একটা সমস্যার সমাধান হওয়াতে টমাস এডিসন খুশিই হলন।

টমাস এডিসন দিন রাত এক করে নানা জিনিসের ফিলামেন্ট বানান, কিন্ত সফল হন না। এই রকম প্রায় ন’হাজার ফিলামেন্ট তিনি বানিয়েছিলেন, যা অসফল হয়। কিন্তু টনাস থেমে যাননি, তার আবিষ্কারে নেশা তাকে থামতে দেয়ন।

এরই মধ্যে একদিন রাতে টমাস এডিসন টেবিলে বসে ছিলেন। তার পাশেই ছিল তেলের ল্যাম্প, ওই ল্যাম্পের তেল ও ফুরিয়ে যাচ্ছিলো। তাই তিনি তেল বাড়িয়ে দিলেন, আর তেল বাড়াতেই কিছু কালি বের হতে লাগলো। এডিসন আবার আশার আলো পেলেন, তিনি বুঝলেন কার্বন তো কোনো জিনিসের তেতে ওঠাকে বাধাগ্রস্থ করেন।

তিনি ছুটে গিয়ে নিয়ে আসলেন একটি কাপড় সেলাই করার সুতা। এরপরে সেই সুতাকে ভিজিয়ে কার্বনে মাঞ্জা দিয়ে চুলায় শুকালেন। আর সেটা কাঁচের জারের মধ্যে রেখে বায়ুশূন্য অবস্থায় ব্যাটারর সাথে যুক্ত করে দিলন। তখনি ছড়িয়ে পড়ল আলো। তবে বাতিটি জ্বলছে কিনা তা খুব একটা বুঝতে পারছিলন না। তবে আলো জ্বলছে। এভাবে প্রায় দুইঘণ্টা ধরে সেই আলো জ্বললো, আর তার সামনে সফলতা হাতে নিয়ে দরদর করে ঘামছিল টমাস এডিসন।

সেই আলো নিভল ৪৫ ঘণ্টা মানে দুই দিন পর। আর তার দিলে টানা তাকিয়ে ছিল সে। দুইটা রাত তিনি ঘুমাননি, খাবারটাও খেয়েছিলো সেই আলোর পাশে। তবে এডিসন সন্তুষ্ট ছিল না, তিনি চেয়েছিল আরও বেশি সময় ধরে জ্বলুক এই আলো এবং এরই প্রেক্ষিতে তিনি আবার শুরু করলন গবেষণা।

গবেষণায় পেলেন নতুন এক আবিষ্কার, তিনি দেখলেন কার্বনে ভেজানো বাশের আশ দিয়ে যদি ফিলামেন্ট তৈরি করা হয়, তবে সেই আলো কয়েক মাস ধরে জ্বলবে। তবে সাধারণত বাঁশ নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার আমাজন নদূর ধারের বাঁশই বেশি ভালো।

আরো পড়ুন: ছবির মানুষটি সামনে আসছে না দূরে যাচ্ছে? উত্তর বলে দেবে, আপনি মানসিকভাবে নারী না পুরুষ

এরপর এলো এক রাত, যে রাতকে বলা যায় ঐতিহাসিক রা। সময়টা ১৮৮০ সালের ১ জানুয়ারি। তিনি মেলো পার্কের গাছে গাছে আর ল্যাম্পপোষ্টে ঝুলালের তার আবিষ্কৃত শতাধিক বাল্ব। দিনের আলোর মতোই জ্বলে ওঠলো রাস্তা, ঘর বাড়ি। সফল হলেন একজন টমাস আলভা এডিসন।

এরপর ১৮৮২ সালের ৪ ঠা সেপ্টেম্বর রাতে তিনি করলেন আরেক ইতিহাস। তিনি হাজার খানেক বড়তে আলো জ্বালালেন। আর ব্যাটারির পরিবরতে পাওয়ার হাউজ তৈরি করলেন, যাতে আলো জ্বলে অবিরাম।

•ব্যক্তি জীবন:
১৮৭১ সালের ২৫ ডিসেম্বরে তিনি ১৬ বছরের মেরি স্টিলওয়েলকে বিয়ে করেন। এরপর তাদের তিনটি সন্তান জন্ম নিয়েছিল পালাক্রমে- ১৮৭৩ সালে মেরিওন এসটেলা এডিসন; ১৮৭৬ সালে টমাস আলভা এডিসন জুনিয়র; এবং ১৮৭৮ সালে উইলিয়াম লেসলি এডিসন।

এরপরে, ১৮৮৪ সালের ৯ অগাস্ট মেরি এডিসন মারা যায়। তার মৃত্যুর পর টমাস এডিসন আবার বিয়ে করেন ২০ বছরের মিনা মিলারকে। মিলা চগিল বিখ্যাত উদ্ভাবক লুইস মিলারের মেয়ে। এরপরে টমাস ও মিনার আবার তিনটি সন্তান জন্ম নেয়- ১৮৮৮ সালে মেডেলিইন এডিসন ; ১৮৯০ সালে চার্লস এডিসন; ১৮৯৮ সালে থিওডর এডিসন।

•মৃত্যু: টমাস আলভা এডিসন ছিলেন একজন প্রতিভাবান বিজ্ঞানী। তিনি যেখানেই হস্তক্ষেপ করেছন, যেখানেই সফলতা পেয়েছিলেন। এই মহান বিজ্ঞানী ১৯৩১ সালের ১৮ই অক্টোবর নিউ জার্সির ওয়েস্ট অরেঞ্জে মৃত্যুবরণ করেন, যখন তার বয়স ছিল ৮৪ বছর।

বিঃদ্রঃ অনেকেই দাবি করেন তিনি অনেক বিজ্ঞানীর আইডিয়া কপি করেছেন। সেই বিষয়ে হয়তো প্রমাণপত্র থাকতেও পারে। তবে আমরা ওই বিষয়ে যাচ্ছি না। এছাড়াও উনার আবিষ্কৃত বৈদ্যুতিক আলো বা বাল্বের অবদান নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে তাকে একজন আলোর প্রবর্তক বলতেই হয়।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।