এমআরএনএ ভ্যাক্সিন কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে?
বর্তমানে কোভিড মহামারীর প্রকোপে অনেক ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়েছে। বাংলাদেশে আমাদেরকে বেশ কয়েক ধরনের করোনা ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে! তার মধ্যে এমআরএনএ ভ্যাক্সিনও ছিল। অনেকেই করোনা ভ্যাক্সিন হিসেবে ফাইজার ও মডার্না ভ্যাক্সিন নিয়েছেন! এই দুটোই কিন্তু এমআরএনএ ভ্যাক্সিন! আদতে এই এমআরএনএ ভ্যাক্সিন কী? এটি কীভাবে কাজ করে? এবং এর সাথে অন্যান্য ভ্যাক্সিনের পার্থক্যটাই বা কী?— আজকের পোস্টে আমরা এই বিষয়গুলোই আলোচনা করব। তবে মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে আমরা ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের ইতিহাস ও ভ্যাক্সিনের ধরন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেবো।
ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের ইতিহাস
অনেক বছর আগেরকার কথা। ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী এডোয়ার্ড জেনার লক্ষ্য করেন যে, গোয়ালিনীরা (Cow-maid) সাধারণত গুটিবসন্তের (Small pox) মহামারীতে আক্রান্ত হয় না। অন্যদিকে, সাধারণ মানুষ গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এর ভিত্তিতে বিজ্ঞানী এডোয়ার্ড ধারণা করেন— গোয়ালিনীরা আগেই গো বসন্ত (Cowpox) দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল। যার জন্য গুটি বসন্ত হয়তো তাদের খুব বেশি ক্ষতি করতে সক্ষম হচ্ছে না। এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে তিনি প্রথম আবিষ্কার করেন গুটিবসন্তের ভ্যাক্সিন। আর তার এই ভ্যাক্সিন বা টিকা সর্বপ্রথম প্রয়োগ করেন জেমস ফেলসপ নামক ৮ বছরের এক সুস্থ বালকের ওপর। মূলত সেই ভ্যাক্সিনটি ছিল গো বসন্তে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের আক্রান্ত স্থানের ফ্লুইড বা তরল৷ তো, বিজ্ঞানী এডোয়ার্ড জেনার দেখলেন ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করায় জেমস একটু মৃদ্যু বসন্ত উপসর্গের পর আবার সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেছে এবং এই ভ্যাক্সিন গুটি বসন্তের আক্রমণ রোধ করতে সফল হয়। এভাবেই তৈরি হয়েছিল পৃথিবীতে প্রথম টিকা বা ভ্যাক্সিন।
⏩ আরও পড়ুন: নারীরাই বেশি ভিটামিনের অভাবে ভোগেন!
ভ্যাক্সিনের প্রকারভেদ
পৃথিবীতে এই পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকারের ভ্যাক্সিন আবিষ্কৃত হয়েছে। যেমন—
১. Attenuated বা weakened ভ্যাক্সিন
২. Inactivated ভ্যাক্সিন [Attenuated ভ্যাক্সিন এবং Inactivated ভ্যাক্সিন দুটোতেই ভাইরাল ভ্যাক্সিন বা ব্যাক্টেরিয়াল ভ্যাক্সিন এই দুটোই ব্যবহার করা হয়।]
৩. Toxoid ভ্যাক্সিন — টক্সিড ভ্যাক্সিনে ইনঅ্যাক্টিভেটেড / নন ইনফেকশাস টক্সিক কম্পাউন্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৪. Subunit ভ্যাক্সিন — সাব-ইউনিট ভ্যাক্সিনে পুরো ইনঅ্যাক্টিভেটেড মাইক্রো অর্গানিজমের বদলে সাব ইউনিট ব্যবহার করা হয়।
৫. Conjugate ভ্যাক্সিন
৬. Outer membrane vesicle ভ্যাক্সিন
৭. Heterotypic ভ্যাক্সিন — এই ভ্যাক্সিনে প্রাণি থেকে নেওয়া প্যাথোজেন ব্যবহার করা হয়। এটাই এডোয়ার্ড জেনারের তৈরি করা প্রথম গুটি বসন্ত ভ্যাক্সিনের ধরণ।
৮. জেনেটিক ভ্যাক্সিন বা Genetic vaccine— এই জেনেটিক ভ্যাক্সিনের তিনটি টাইপ রয়েছে। যেমন:
- Viral vector ভ্যাক্সিন – এইটাতে ভ্যাক্সিনে ভাইরাল ভেক্টর ব্যবহার করা হয়।
- RNA ভ্যাক্সিন – এই ভ্যাক্সিনে এমআরএনএ ব্যবহার করা হয়, যেটা আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয়।
- DNA ভ্যাক্সিন – এই ভ্যাক্সিনে ভাইরাল / ব্যাক্টেরিয়াল ডিএনএ ব্যবহার করা হয়।
⏩ আরও পড়ুন: ডিটক্স ড্রিংকস: গরমে আপনাকে হাইড্রেটেড ও ফিট রাখবে!
সাধারণ টিকা বা ভ্যাক্সিন কীভাবে কাজ করে?
ভ্যাক্সিন কীভাবে কাজ করে তা জানার আগে আমাদের বুঝতে হবে আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কীভাবে কাজ করে।
ধরুন, আমাদের কোনো ভাইরাস / ব্যাক্টেরিয়া আক্রমণ করল, তখন সেই ভাইরাস / ব্যাক্টেরিয়া আমাদের শরীরের প্রবেশ করে নিজের সংখ্যা বৃদ্ধি বা কলোনি তৈরি করতে শুরু করে। আর এর ফলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। আর প্রাকৃতিক ভাবেই বাইরে হতে মানুষের বা প্রাণীর শরীরে কোনো রোগ-জীবাণু বা কোনো কিছু প্রবেশ করলে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সেটার বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
আমাদের ইমিউন সিস্টেম এই ভাইরাস / ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ মোকাবেলায় আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে থাকে। সেটা প্রাণীর ত্বক হতে শুরু করে এমনকি চোখের পানিও হতে পারে। এছাড়াও আমাদের রক্তে থাকা লৌহকণিকা বা রেড ব্লাড সেল যা টিস্যু ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অক্সিজেন সবারহ করে এবং রক্তের শ্বেতকণিকা বা হোয়াইট ব্লাড সেল যারা যেকোনো সংক্রমণ প্রতিহত করে। সাধারণত বিভিন্ন ধরনের শ্বেতকণিকা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ভাইরাস বা রোগ জীবাণুর মোকাবেলা করে।
তো, আমাদের শরীরে যখন কোনো ভাইরাস / প্যাথোজেন প্রবেশ করে; তাদের দেহের কোনো অংশ বা মলিকিউল; অ্যান্টিজেন [ফরেইন বডি / প্রোডাক্ট] হিসেবে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমের কাছে ধরা খায়! এরপর আমাদের ইমিউনো সেলগুলো অ্যান্টিজেনের সাথে যুক্ত করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করা শুরু করে! উৎপন্ন অ্যান্টিবডিগুলো ভাইরাস /প্যাথোজেনের অ্যান্টিজেনের সাথে যুক্ত হয়ে, সেগুলোকে দুর্বল করে মেরে ফেলে অথবা ম্যাক্রোফেজের মাধ্যমে ভাইরাস /প্যাথোজেনগুলোকে আস্ত গিলে ফেলে [এনগালফ করে]। শরীরে ভেতর ভাইরাস বনাম ইমিউনো সেলের এই যুদ্ধ [পক্ষান্তরে অ্যান্টিবডি বনাম অ্যান্টিজেন] চলাকালীন সময়; আমাদের শরীরে উপসর্গ হিসেবে জ্বর আসে, গায়ে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল দুর্বল লাগে!
অনেক সময় কোনো উপসর্গ ছাড়াই, অনেক সংক্রমণকে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম নীরবে ঠেকিয়ে দেয়! আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম যখন দুর্বল হয়ে যায় কিংবা ভাইরাস / প্যাথোজেনের কাছে হার মানে তখনই আমরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাই!
আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমের দারুণ স্মৃতি ক্ষমতা হলো, তারা একবার যেটাকে ফরেইন বডি / প্রোডাক্ট হিসেবে ধরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে অ্যাটাক করে; সেই শত্রুকে তারা আর সারা জীবনেও ভুলে না! পরের বার যখনই তাদের দেখা পায়, সাথে সাথে অ্যাটাক করা শুরু করে দেয়। এর মানে হলো, আপনি একবার কোনো ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে, আপনার ইমিউনিটি সিস্টেমের সহায়তায় সেটাকে প্রতিহত করতে পারলে, পরে আবার সেই ভাইরাসে আপনার আক্রান্ত হওয়ার চান্স অনেক কম! [অবশ্য আপনার ইমিউনিটি সিস্টেমকে পূর্বের মতন শক্তিশালী থাকতে হবে!]
⏩ আরও পড়ুন: পোস্ট কোভিড সিনড্রোম কী এবং এটি কীভাবে সামলাবেন?
তো এই গেল আমাদের ইমিউন সিস্টেম কীভাবে আমাদের শরীর রক্ষা করে তার গল্প। কিন্তু, ভ্যাক্সিন আসলে কীভাবে কাজ করে—
আমাদের শরীরে যখন কোনো ভ্যাক্সিন প্রবেশ করানো হয়, সেই ভ্যাক্সিন শরীরে প্রবেশ করে, আমাদের ইনফেক্টেড না করেও, ভাইরাল এন্টিজেন তৈরি কিংবা কোনো সংক্রমণকে অনুকরণ করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে অ্যাক্টিভেট করে দেয়! এরপর ফলে ইমিউনিটি সিস্টেম সেই সংক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করা শুরু করে! এভাবে ভ্যাক্সিনের মাধ্যমে আমরা আক্রান্ত না হয়েও, আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে বিভিন্ন রোগ জীবাণু চিনিয়ে দিই। ফলে যখন আসল ভাইরাস বা জীবাণু আমাদের শরীরে আক্রমণ করে, ইমিউনিটি সিস্টেম তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।
এমআরএনএ ভ্যাক্সিন কী এবং কীভাবে কাজ করে?
এতদিন পর্যন্ত অর্থাৎ ট্র্যাডিশনালি ভ্যাক্সিন তৈরি করা হতো ভাইরাল ভেক্টর দিয়ে কিংবা ইনঅ্যাক্টিভেটেড বা দুর্বল করা ভাইরাস দিয়ে। ভ্যাক্সিন হিসেবে mRNA এর ব্যবহার নিয়ে যদিও ১৯৯০ সাল থেকেই কথা হচ্ছে, প্রথমবারের মতো সফল mRNA ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয় ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে! এবং এগুলো ছিল ফাইজার ও মডার্না ভ্যাক্সিন! ফাইজার ও মডার্না ভ্যাক্সিন সারাবিশ্বে আরও অন্যান্য সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে mRNA ভ্যাক্সিন ব্যবহারের নতুন দিগন্ত রচনা করেছিল।
mRNA বা মেসেঞ্জার আরএনএ মূলত এক ধরনের আরএনএ বা রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড, যা কোনো সেল বা কোষের মধ্যে প্রোটিন এনকোড করে। তাদের এই ফাংশনকে কাজে লাগিয়ে mRNA ভ্যাক্সিন তৈরি করা হয়। এই ভ্যাক্সিন শরীরে প্রবেশ করে ভাইরাল প্রোটিন তৈরি করে, এবং শরীরের ইমিউনো সিস্টেমকে সেই প্রোটিন ডিটেক্ট করে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সহযোগিতা করে।
করোনা ভাইরাস আর ফাইজার বা মডার্নার উদাহরণ দিয়ে চিন্তা করলে ব্যাপারটা আমরা আরও ক্লিয়ারলি বুঝতে পারি। আমরা জানি, করোনা ভাইরাসের মেমব্রেনে স্পাইক প্রোটিন থাকে, যেটার মাধ্যমে ওরা আমাদের ফুসফুসের কোষের সাথে বাইন্ড করে বা যুক্ত হয়। তো, ফাইজার বা মডার্না ভ্যাক্সিন কারও শরীরে প্রবেশ করার পর, সেই স্পাইক প্রোটিন এনকোড করে কিংবা উৎপন্ন করে। যদিও এই স্পাইক প্রোটিন কাউকে ইনফেক্টেড কিংবা অসুস্থ করে না! এরপর ভ্যাকসিনেটেড ব্যক্তি বা পার্সনের ইমিউনিটি সিস্টেম ভ্যাক্সিনের তৈরি প্রোটিনকে ফরেইন বডি হিসেবে ডিটেক্ট করে এবং তাকে আক্রমণ করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করা শুরু করে দেয়।
আমরা আগেই জেনেছি, আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমের একটি দারুণ ক্ষমতা হলো, তারা একবার যাকে ফরেইন বডি বা প্রোডাক্ট হিসেবে ধরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে আক্রমণ করে; সেই শত্রুকে তারা আর সারা জীবনেও ভুলে না! পরের বার যখনই তাদের দেখা পায়, সাথে সাথে আক্রমণ করা শুরু করে দেয়। তো, mRNA ভ্যাক্সিন এর মাধ্যমে আমরা ইনফেক্টেড না হয়েও, শত্রুদের চিনিয়ে দিই আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে; ফলে এরপরে সত্যি সত্যি যদি শত্রু ঢুকেও পড়ে, তাদের আর রক্ষা নেই!
⏩ আরও পড়ুন: বর্ষা মৌসুমে পায়ের বিশেষ যত্ন!
অন্যান্য ভ্যাক্সিনের তুলনায় এমআরএনএ ভ্যাক্সিন কেন এগিয়ে?
অন্যান্য ভ্যাক্সিন তৈরিতে বিশাল পরিমাণের ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া কালচার করে, এরপর সেগুলোকে দুর্বল বা ইনঅ্যাক্টিভেট করে, কিংবা কোনো অ্যান্টিজেন কমপাউন্ড এক্সট্রাক্ট করে ভ্যাক্সিন তৈরি করতে হয়। একারণে ট্র্যাডিশনাল ভ্যাক্সিন তৈরিতে অনেক দীর্ঘ সময় লাগে। একটা সফল ভ্যাক্সিন তৈরি করতে প্রায় ৪-৫ বছর বা এরও অধিক সময় লেগে যায়!
সে তুলনায় এমআরএনএ ভ্যাক্সিন আরও দ্রুত তৈরি করা সম্ভব, যেহেতু ট্র্যাডিশনাল মেথডের অনেক স্টেপ স্কিপ বা বাদ দেওয়া যায়৷ এছাড়াও এমআরএন ভ্যাক্সিন শরীরে প্রবেশ করার পর, নিজেই ভাইরাল প্রোটিন উৎপন্ন করে এবং কাজ শেষ নিজে নিজে ধ্বংস হয়ে যায়!
স্বাভাবিকভাবেই কোনো মাইক্রোঅর্গানিজম, ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়া উৎপন্ন করে ভ্যাক্সিন তৈরির চেয়ে, এমআরএনএ উৎপন্ন করে ভ্যাক্সিন তৈরি বেশি কার্যকরী। এ ছাড়া বর্তমানে করোনা ভাইরাসের যতগুলো ভ্যাক্সিন ব্যবহৃত হচ্ছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে ফাইজার ও মডার্না তথা এমআরএনএ ভ্যাক্সিন!
সম্প্রতি নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র থেকে জানা গেছে, কয়েক দশক ধরে চলমান, এইডস মহামারীর মারণঘাতী ভাইরাস এইচআইভির বিরুদ্ধেও এনিমল ট্রায়ালে কার্যকারিতা দেখিয়েছে এমআরএনএ ভ্যাক্সিন! শুধু এগুলো নয়, ইবোলা, জিকা ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো মারাত্মক ভাইরাসগুলোকে ঠেকাতে এমআরএনএ ভ্যাক্সিনের ব্যবহার নিয়ে গবেষণা চলমান রয়েছে!
এ ছাড়াও ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য এমআরএনএ ভ্যাক্সিন ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে! কারণ কিছু কিছু ক্যান্সেরাস সেল [কোষ] এমন সব প্রোটিন তৈরি করে, যেগুলো কোনো হেলদি সেলে পাওয়া যায় না! তো, এমআরএন ভ্যাক্সিনের মাধ্যমে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে ওই প্রোটিনগুলো চিনিয়ে দেওয়া গেলে, ইমিউনিটি সিস্টেম ক্যান্সেরাস সেলগুলোকে ডিটেক্ট করে সহজেই ধ্বংস করতে পারবে! তবে এই গবেষণা এখনো আর্লি স্টেজে রয়েছে! হয়তো ভবিষ্যতে দেখা মিলবে নতুন দিগন্তের।
এ ছাড়া থিয়োরিটিক্যালি কিংবা হাইপোথিটিক্যালি সিস্টিক ফিব্রোসিস, সিকল সেল অ্যানেমিয়া কিংবা ডায়াবেটিসের মতো রোগের জন্য দায়ী মিসিং প্রোটিনগুলো এমআরএ ভ্যাক্সিনের মাধ্যমে প্রডিউস করা সম্ভব! অবশ্য এগুলো এখনো বিস্তর গবেষণার বিষয়!
যাই হোক, করোনায় এমআরএনএ ভ্যাক্সিনের ব্যবহার ভ্যাক্সিনের ইতিহাসে একটা নতুন দ্বার উন্মোচন করে দিয়েছে! এমআরএনএ ভ্যাক্সিন টেকনোলজি হয়তো পৃথিবীর মেডিকেল শাখায় একটা রেভুলেশনারি পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে! অদূর ভবিষ্যতে এই mRNA ভ্যাক্সিন হয়তো পৃথিবীর মানুষের রক্ষাকর্তা হয়ে, হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচাবে বিভিন্ন মরণব্যধিকে ঠেকিয়ে দিয়ে!