
ওসি স্বামীর ঘুষের টাকায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন স্ত্রী! কী নেই তার? চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার এলাকায় প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের ছয়তলা বাড়ি। আছে কক্সবাজার সদরে প্লটসহ কোটি টাকার জমি। রয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী দুইটি বাস।
এসব সম্পত্তির মালিক হয়েছেন ফেরদৌসী আকতার নামের এক গৃহিণী। তার স্বামী মো. শাহজাহান চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের ইনস্পেক্টর। এর আগে তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া ও সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তথ্য মতে, স্বামী পুলিশ কর্মকর্তার ‘ঘুষ ও দুর্নীতির’ মাধ্যমে এসব সম্পদের মালিক হন স্ত্রী ফেরদৌসী আকতার। তার ৩ কোটি ২৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের হদিস পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া ফেরদৌসী নিজেকে মৎস্য ও পোলট্রি খামারি বলেও দাবি করেছেন। যদিও এসবের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন# প্রিয়তমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, সুতরাং বেঁচে থেকে লাভ নেই – বলেই আত্মহ’ত্যা!
ফেরদৌসীর স্বামী মো. শাহজাহান ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ পুলিশে সাব ইনস্পেক্টর (এসআই) হিসেবে যোগদান করেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লালমাই উপজেলার কাতালিয়া এলাকায়। চাকরির শুরুতে তিনি বেতন পেতেন ২ হাজার ৬০০ টাকা। বর্তমানে শিল্প পুলিশ চট্টগ্রামে পরিদর্শক হিসেবে তিনি বেতন পান মাত্র ৬০ হাজার টাকা।
বেতন–ভাতার বাইরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠায় অনুসন্ধানে নেমেছিল দুদক। আর তাতেই ওসি শাহজাহানের অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায় ৭৮ লাখ টাকার। এ কারণে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক রতন কুমার দাশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে তার স্ত্রী ফেরদৌসীর অজস্র অবৈধ সম্পদের তথ্য। এরপর চলতি বছরের জুলাই মাসে স্বামী স্ত্রী দু’জনের বিরুদ্ধেই দ্বিতীয় মামলাটি হয়।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বলেন, মামলা হওয়ার পর আসামিরা ঘুষের টাকায় অর্জিত এসব সম্পদ হস্তান্তর কিংবা স্থানান্তর করতে পারেন। এ জন্য দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করা হয় সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য। ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন নেসা সম্পদগুলো বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। দুদক জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এসব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।