ব্যবসা-বাণিজ্যসংবাদ

আমদানি না হলেও চালের সংকট হবে না!

সম্প্রতি আতপ চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়েছে ভারত সরকার। বন্দরে আটকা পড়েছে কয়েক লাখ টন চাল। এরপরেও দেশের বাজারে চালের দামে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন মিলমালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, দেশের বাজারে চালের কোনো সংকট নেই। তবে ভারত সরকার সেদ্ধ চালের ওপর শুল্কারোপ করলে দেশের বাজারে বাড়তে পারে চালের দাম।

নওগাঁ জেলা ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরদ বরণ সাহা জানান, ভারত সরকার আতপ চালের ওপর শুল্কারোপ করেছে। যদি আতপের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে দেশে চালের দামে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে সেদ্ধ চালের ওপর শুল্কারোপ কিংবা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে বাজারে চালের দাম কিছুটা বাড়বে।

বাদামতলী-বাবুবাজার চাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি নিজাম উদ্দিনের মতে, দেশে চালের কোনো অভাব নেই। চলতি আমনের শেষে ও আগামী বোরোর আগে কিছুটা সংকট হতে পারে। সেটিও এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে ব্যবসাকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। সরকার বেশি কড়াকড়ি করলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। তখনই উল্টাপাল্টা দামে বিক্রি হয়।

আরও পড়ুন: পরচুলা থেকে রপ্তানি আয় ১০ বছরে বেড়েছে ১০ গুণ!

এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলেন, ভারতের চালের বাজার মূলত মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, চীনসহ বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশে ভারতের বাজার খুবই সীমিত। সম্প্রতি তারা আতপ চালের ওপর শুল্ক বাড়ানোয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রভাব পড়লেও দেশের বাজারে কোনো সমস্যা হবে না। আগামী আড়াই-তিন মাসের মধ্যে দেশে আমন চাল উঠবে। দেশের সবচেয়ে বড় আবাদ বোরো মৌসুম। আর ভারতে বড় আবাদ আমনে। সে দেশে এবার প্রকট খরা দেখা দিয়েছে। তাদের সেচ দেওয়াও বাংলাদেশের মতো সহজ নয়। ফলে তাদের উৎপাদন নিয়ে সমস্যা হতে পারে। তবে দেশে আমন ধান ইতিমধ্যে রোপণ করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত কম হলেও সেচের মাধ্যমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর চেষ্টায় রয়েছেন কৃষকেরা।

এ প্রসঙ্গে খুলনার চাল আমদানিকারক কাজী আবদুস সোবহান বলেন, সম্প্রতি চীন ভারত থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি করে। এ কারণে সে দেশে রপ্তানির ওপর শুল্ক বাড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশে পাঁচ থেকে সাত লাখ মেট্রিক টনের মতো সেদ্ধ চাল ভারত থেকে আমদানি হয়। এ বছর বেসরকারি পর্যায়ে ১০ লাখ টনের বেশি অনুমোদন দেওয়া হলেও আড়াই লাখ মেট্রিক টনের মতো চাল দেশে আসবে।

বাজার পরিস্থিতি যাচাই করে দেখা যায়, দেশে গত এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে চালের দাম পাঁচ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, অভিযানের সময় সরকারি সংস্থার লোকজন মজুত নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু একদমই মজুত না থাকলে পরে সংকট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার বিশ্লেষণ তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাঝারি চালে দাম কমেছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং মোটা চালে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।