মাল্টা চাষে বাচ্চুর সফলতা!

আড়াই বিঘা জমিতে মাল্টার চাষ করে সফল হয়েছেন যশোর সদরের বসুন্দিয়ার বাচ্চু খান নামের এক চাষি। পুরো বাগানজুড়ে মাল্টা গাছ ফলে ভরে গেছে। কয়েকটা দিন পরেই পাকা মাল্টা বাজারে বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠবে। গাছ থেকে পাওয়া মাল্টা পাঁচ লাখেরও বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
জানা গেছে, নিজ বাড়ির জমিতে প্রায় পাঁচ বছর আগে বরিশাল থেকে বারি-১ জাতের চারা সংগ্রহ করে শখের বশে শুরু করেন মাল্টার বাগান। কৃষি কাজের প্রতি বরাবরই বাচ্চা খানের আগ্রহ ছিলো। আর সেই আগ্রহ থেকেই মালটা চাষের সিদ্ধান্ত নেন। তারপর কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাল্টা চাষ সম্পর্কে ধারণা নেন। একপর্যায়ে ভালো চারা কোথায় পাওয়া যাবে সে ব্যাপারেও খোঁজখবর নেয়া শুরু করেন।
মাল্টার চারার জন্য যোগাযোগ করেন বরিশাল জেলার একটি নার্সারিতে। সেখান থেকে ২২০টি চারা এনে জমিতে রোপণ করেন। এরপর তার নিবিড় পরিচর্যা আর যত্নে চারাগুলি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। প্রথম বছরেই গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। প্রথম বছর ২০০ গাছে কম-বেশি মাল্টা ধরে। গাছ ভেদে ২০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত মাল্টা ধরেছে। প্রথম বছর তুলনামুলকভাবে ফল কম ধরলেও সব মিলিয়ে প্রথম বছরে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেন। তবে এ বছর পেয়েছেন ব্যাপক ফলন। পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ফল বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগে মাছ চাষে কোটিপতি ওসমান!
চাষি বাচ্চু খান বলেন, মাল্টা গাছে মাঝে মধ্যে ছত্রাকের আক্রমণ হয়। ইউনিয়ন ও উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করে তা দমন করা সম্ভব। বাগানে সঠিকভাবে পরিচর্যা ও ফলন ভালো হলে অর্থনৈতিকভাবে অনেক লাভবান হতে পারব। তিনি বাগানে মাল্টা চাষের পাশাপাশি দেশি জাতের ওল, কাগজি লেবু, কুল দার্জিলিং কমলা, পাকিস্তানি কমলাসহ অনেক প্রজাতির ফল ও সবজিরও চাষ করেন।
মাল্টা চাষের খবর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ায় অন্যান্য কৃষকদের মাঝেও আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মাল্টার বাগান দেখতে ভিড় করছেন ও ধারণা নিচ্ছেন চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে। আগামীতে মাল্টা চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অনেক চাষি। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মাল্টা বাগান পরিদর্শনে আসছেন অনেকে।
কেফায়েত নগর গ্রামের আবু তাহের বলেন, আমি বাগানটি পরিদর্শন করেছি। মাল্টা খেয়ে দেখেছি। স্বাদ খুব ভাল। সাহস নিয়ে এত বড় বাগান গড়ে তুলেছে, দেখে আমি খুব মুগ্ধ হয়েছি। আমিও একটি বাগান করব।
স্থানীয় ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, আমাদের তত্বাবধানে বাচ্চু মাল্টার চাষ করেছেন। শুরু থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি। তার বাগান দেখে আশপাশের এলাকার চাষিরা মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাজ্জাদ হোসেন জানান, বাচ্চুর মাল্টা বাগান তৈরির পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসাযোগ্য। তিনি কৃষি বিভাগের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে থেকে নিয়ম ও পদ্ধতি মেনে মাল্টা চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন।
আরও পড়ুন: ভরিপ্রতি স্বর্ণের দামে রেকর্ড!