অন্যান্য

কাউকে বেশি মশা কামড়ায়, আবার কাউকে কম, কেন এমন হয়?

কাউকে বেশি মশা কামড়ায়, আবার কাউকে কম, কেন এমন হয়?এই বিষয়টিকে নিয়ে চিকিৎসকগন বলেন, অনেক মানুষকে বেশি মশা কামড়ানোর পিছনে রয়েছে অনেকটি কারণ।

আমাদের মাঝে অনেককেই বলতে শুনে থাকি মশা কেন আমাকে এত বেশি কামড়ায়? যার কারনে আমরা মনে করে থাকি তাদের রক্ত এতই মিষ্টি যে মশা তাই তাদেরই জেকে ধরে। মশার কামড় একটি বিরক্তিকর। মশার কামড় খেতে কেউ পছন্দ করেন না এবং তার গুনগুন শব্দ খুবই বিরক্তিকর। আমরা এই মশা থেকে বাঁচতে নানান উপায় খুঁজে থকি। কেননা এই মশাটি আমাদের শরীরের অনেক অসুখের কারণ হতে পারে। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়ার মতো মারাত্মক সব অসুখ হতে পারে এই মশার কামড় থেকেই। পৃথিবীতে মশার কামড় খাইনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে আপনি যদি আসে পাশে লক্ষ্য করেন। দেখবেন কিছু মানুষকে মশা তুলনামূলক বেশি কামড়ায়। এই বিষয়টিকে নিয়ে চিকিৎসকগন বলেন, অনেক মানুষকে বেশি মশা কামড়ানোর পিছনে রয়েছে অনেকটি কারণ।

তবে এটা মেনে নিতে হবে অবশ্যই কিছু কিছু মানুষকে বেশি মশা কামড়ায়। মশাদের এমন মতিগতির পিছনে মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্যই দায়ী। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কিছু মানুষকে মশা বেশি কামড়ানোর রহস্য কি? আপনার শরীরের রক্তের গ্রুপের কারণে > গবেষণা করে জানা গেছে, মানুষকে বেশি মশা কামড়ানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে রক্তের গ্রুপ। কিছু রক্তের গ্রুপ রয়েছে যে রক্ত খেতে খুবই পছন্দ করে মশা। যেমেন:এডিস মশাদের পছন্দ হলো ও ব্লাড গ্রুপের রক্ত। অ্যানোফিলিসদের পছন্দ এবি গ্রুপের রক্ত। যাদের এইরকম ব্লাড রয়েছে তাদেরকেই মশা খুব বেশি আক্রমণ করে। মশাদের মধ্যে শুধুমাত্র স্ত্রী মশারাই কামড়ায়। কারণ ডিম তৈরির জন্য যে প্রোটিনের প্রয়োজন হয়, তা তারা রক্ত থেকে সংগ্রহ করে। কীভাবে তারা তাদের শিকারের সন্ধান পায়, তা থেকেই বোঝা যায় মশা কাকে বেশি কামড়াবে।

স্ত্রী মশাদের বিশেষ ঘ্রানেন্দ্রিয় থাকে। এটি কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং গায়ের গন্ধ টের পায়। তার অর্থ যাঁরা বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমণ করেন, তাঁদের গায়ের গন্ধ টের পেলে মশা সেদিকে ছুটে যায়। কারা বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন করেন?
গর্ভবতী নারী > গর্ভবতী নারীরা অন্য নারীদের চেয়ে গড়ে ২১ শতাংশ বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করেন। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার তিন মাসের সময় নারীরা বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড বাতাসে ছাড়েন। এই ঘটনা মশাকে বেশি আকৃষ্ট করে তাঁদের কামড়াতে।
পোশাকের রং > গাঢ় কোনো রং যেমন—লাল, নীল জাতীয় পোশাক মশাদের বেশ পছন্দ। তাই যে সময় মশার উপদ্রব বেশি, সেই সময় হালকা রঙের সাদা বা খাকি পোশাক পরাই শ্রেয়।

ব্যাকটেরিয়ার কারণে > মশার কামড় অনেকটা নির্ভর করে কারও ত্বকের কতটা ব্যাকটেরিয়া আছে তার ওপরও। কারণ যেখানে ব্যাকটেরিয়া বেশি থাকে, মশা সেখানেই বেশি আকৃষ্ট হয়। আর এ কারণেই পায়ের গোড়ালিতে মশা বেশি কামড়ায়।
কার্বন ডাই অক্সাইডের খোঁজে > কার্বন ডাই অক্সাইডের খোঁজ মশারা অনেক দূর থেকেই পায়। যাদের চেহারা বড়সড়, স্বাভাবিকভাবে তাদের শরীর থেকে তুলনামূলক বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড বেশি নির্গত হয়। তাই মশা তাদের বেশি কামড়ায়। কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয় মুখ ও নাক থেকে। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাথার উপর মশার ঝাঁক ঘুরতে দেখা যায়। এছাড়াও দেখা গিয়েছে, এক্সারসাইজ বা প্রচণ্ড পরিশ্রমের পরেও মশার কামড় বেশি খেতে হয়। তার কারণ কায়িক পরিশ্রম বেশি হলে ঘামের সঙ্গে ল্যাকটিক অ্যাসিড বেরোতে থাকে। তার সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে। ফলে মশা সহজে তাঁদের উপস্থিতি টের পায় এবং ছুটে আসে।

আরো পড়ুন: বিশ্বের দীর্ঘতম ৭টি সেতু

জিনগত কারণও রয়েছে মশার কামড় খাওয়ার পিছনে। জিনগত কারণে কারও কারও ত্বকে এমন কিছু রাসায়নিকের ক্ষরণ হয়, যাতে মশা তাঁদের অস্তিত্ব সহজে বুঝতে পারে। গন্ধের কারণে > নানা ধরনের গন্ধ পায় মশারা। এরা ঘাম থেকে নির্গত অ্যামোনিয়া, ল্যাকটিক অ্যাসিডের গন্ধ পায়। অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে শরীরে উত্তাপ বাড়ে এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয়। মশা কাকে বেশি কামড়াবে তা অনেকটা নির্ভর করে ঘামের গন্ধের ওপরেও। কারণ যারা বেশি ঘামে, তাদের খোঁজ মশা অনেক দূর থেকেই পেয়ে যায়। জিনগত > কোনো কোনো মানুষের দেহ স্বাভাবিকভাবেই মশা প্রতিরোধক থাকে। সেটা জিনগত কারণেই হয়। এ জন্য মশা কাউকে বেশি কামড়ায় আর কাউকে কম কামড়ায়। যাদের বেশি কামড়ায়, তাদের সতর্ক থাকা উচিত বেশি।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।