অনুলিপি ডেস্কঃ দিন যত যাচ্ছে ক্রমাগত আমাদের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়েই চলছে। তা নিয়ে আমরা অনেকে দিশেহারা হয়ে পড়ছি, কিভাবে ব্যয় কমিয়ে আয় বাড়ানো যায়। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্যয় কমাতে শুরু করতে পারেন বিদ্যুৎ বিল থেকে। শীতের চাইতে গরমকালে বিদ্যুৎ বিল সাধারনত বেশি আসে। কারন গরমকালে প্রচণ্ড গরমে অতীষ্ট থাকি সবাই। তাই তো সে সময় আমাদের শুধু ভরসা ফ্যান, পাখা ও এয়ার কন্ডিশনের বাতাস। তবে এসব একনাগাড়ে চালালেই তো হবে না! মাস শেষে গুনতে হবে হাজার হাজার টাকা। এরই মধ্যে অনেকেই হয়তো বিদ্যুৎ বিল দিতে গিয়ে টের পাচ্ছেন বিষয়টি! শীতকালে বিদ্যুৎ বিল কম আসার কারন, শীতে আমরা ফ্যান বা এসি তেমন ব্যবহার করিনা। বা ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। শীতকাল যেতেই গরম আসতে হু হু করে বাড়তে থাকে বিদ্যুৎ বিল। যা নিয়ে আমরা মাঝেমধ্যে রাগান্বিত হয়ে থাকি বিদ্যুৎ অফিসারের সাথে। তবে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা আমাদের জন্য জরুরী। আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে এমন ৭ টি কৌশলের কথা বলবো। যা অবলম্বন করলেই গরমে বিদ্যুৎ বিল কমানো সম্ভব-
১। ওয়াশিং মেশিনের ব্যবহার > রোজ ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করলে অধিক বিদ্যুৎ খরচ হয়। তাই একসঙ্গে অনেকগুলো কাপড় জমে গেলে ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করুন। সমস্ত কাপড় নিয়মিত ওয়াশিং মেশিনে ধোয়ার পরিবর্তে, বড়, ভারী ও অধিক ময়লা কাপড়ই ওয়াশিং মেশিনের জন্য জমিয়ে রাখুন। এর ফলে বিদ্যুতের ব্যবহার কমবে এবং ইলেকট্রিক বিলও কম আসবে। তাই খুব প্রয়োজন পড়লে দু-তিন দিনে একবার ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধুতে দিন। সপ্তাহে একবার ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। আবার গরম কালে ওয়াশিং মেশিনে কাপড় শোকাবেন না। তার পরিবর্তে মেশিনে কাপড় ধোয়া হয়ে গেলে, তা হাত দিয়ে নিংড়ে রোদে শুকোতে দিন।
২। বিদ্যুতের ইউনিট গোণা শুরু করুন > অনেকেই ইলেকট্রিক বিল হাতে এলেই তার মূল্য শোধ করে, বিলটিকে যত্নে রেখে দেন। কিন্তু এটি করার আগে একবার দেখুন, কোন কোন মাসে কত ইউনিট ব্যয় হয়েছে। কোনও মাসে কম ইউনিট ব্যবহার হলে, তার কারণ অনুসন্ধান করুন। পুরো মাস বাড়িতে থাকা, খাওয়া-দাওয়া করা সত্ত্বেও বিল কম এলে, মনে করার চেষ্টা করুন, সেই মাসে আপনি কোন কোন ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার কম করেছেন। সেই অনুযায়ী নিজের প্রতি মাসের বিদ্যুৎ খরচের পরিকল্পনা করুন।
৩। ভেন্টিলেশন > যথাযথ ভেন্টিলেশনের অভাবে দিনের বেলাতেও বার বার লাইট জ্বালাতে হয়। ভেন্টিলেশন এমন হওয়া উচিত, যাতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যরশ্মি বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে। আবার খোলা জানালা থাকলে সন্ধের দিকে হাওয়াও ভালো আসে, সে ক্ষেত্রে কুলার বা এসি বন্ধ রাখা যেতে পারে।
৪। পুরনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করুন> যেকোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি পুরোনো হয়ে গেলে তার গুণমান খারাপ হয়ে যায়। অনেক দিন ধরে একই যন্ত্র ব্যবহার করলে তা ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। বেশি পুরোনো হয়ে গেল বিদ্যুৎ পোড়ে বেশি। স্বাভাবিকভাবেই বিলও বেশি আসে। ৫। গরম কালে মোটা পরদা লাগান> ঘরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা যত বেশি হবে কুলার বা এসি ততটাই সময় নেবে ঘর ঠান্ডা করার জন্য। সে ক্ষেত্রে অধিক সময় পর্যন্ত কুলার বা এসি চালাতে হয়, ফলে বিলও বাড়ে। তাই কক্ষে মোটা পর্দা লাগালে বাইরের গরম হাওয়া ও আলো কম আসবে এবং ঘর তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হবে।
আরো পড়ুন: ঘুমানোর সময় মোবাইল মাথার কাছে রেখে ঘুমানো কতটা ক্ষতিকর জানেন?
৬। বিদ্যুৎ–চালিত যন্ত্র ব্যবহার না করে কিছু পণ্যের ম্যানুয়াল ডিভাইস ব্যবহার করলে বা রান্নাঘরে বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করলে বিল কম আসবে। যেমন ব্লেন্ডার, এগ বিটার, ফুড প্রসেসর, টোস্টার, স্যান্ডুইচ মেশিন, জুসার ইত্যাদি।
৭। অদৃশ্য বিদ্যুত কম খরচ করুন> অহেতুক অপচয় করার মানসিকতা বাদ দিতে হবে। বাড়িতে অনেকগুলো ঘর থাকলে যে ঘরে কেউ থাকছে না সে ঘরের বাতি ও ফ্যান বন্ধ রাখুন। টিভি চালিয়ে রেখেছেন অথচ দেখছেন না, আবার মিউজিক সিস্টেম প্লাগে লাগিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন, এমনকি সুইচ অফ করারও কথা মনে নেই। সে ক্ষেত্রে বিদ্যুতের অপচয় একদিনে কম হলেও, এর প্রভাব গিয়ে পড়ে সামগ্রিক বিলের ওপর। ঘর থেকে বাইরে গেলে বাতি, ফ্যান ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্রের সুইচ বন্ধ করে বের হন। কিছুদিনের জন্য কোথাও বেড়াতে গেলে মেইন সুইচ বন্ধ করতে ভুলবেননা।ফ্রিজে গরম খাবার রাখবেন না। গরম খাবার রাখলে মাসে এক দিন ফ্রিজ খালি করুন। ফ্রিজ পরিষ্কার করুন ও অপ্রয়োজনে ফ্রিজ চালাবেন না। ব্যাটারি চার্জার (যেমন- ল্যাপটপ, সেল ফোন এবং ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদির) সমূহ প্লাগ ইন করে রাখলে তারা শক্তি গ্রহণ করতে থাকে সুতরাং চার্জার বৈদ্যুতিক পয়েন্ট থেকে খুলে রাখা উচিত। অনেকেই চার্জার থেকে ফোন খোলেন কিন্তু সুইচটি আর বন্ধ করেন না। এমন হলে সচেতন হোন।