চবিতে ছাত্রী হলে প্রবেশের নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার (১৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করে অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজন যুবক।
সেদিন রাত দশটার দিকে এক বন্ধুসহ ওই ছাত্রী খালেদা জিয়া হলের দিকে যাচ্ছিলেন। এমন সময় ওই যুবকরা তাদের গতিরোধ করে তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
এক পর্যায়ে তারা ওই শিক্ষার্থীকে টেনে হিঁচড়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং যৌন নির্যাতন করে সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিয়ো করে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী প্রক্টর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর রবিউল হাসান ভূঁইয়া এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা অভিযোগটি আমলে নিয়েছি। ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন# চালু হয়েছে চবির শাটল ট্রেন
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুরে উপাচার্যের সাথে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট ও ছাত্র উপদেষ্টাদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় মেয়েদের আবাসিক হলগুলোতে প্রবেশের সময়সীমা রাত দশটা পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর আগে হলগুলোতে পৃথক পৃথক প্রবেশের সময়সীমা চালু ছিল।
এই প্রথম কেন্দ্রীয়ভাবে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলো। এ ঘোষণা শোনার পর বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ছাত্রীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান, ‘অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে হলে প্রবেশের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। অনেককেই শহরে টিউশনী বা অন্যান্য কাজে যেতে হয়। তাদের কথা চিন্তা না করেই এভাবে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া দুঃখজনক। ছাত্রীদের জন্যে শিক্ষার্থীবান্ধব নিয়ম রাখা উচিত ছিল। এখন অনেককেই শহর থেকে এসে হলে ফিরতে বেগ পেতে হবে।’
আজ বুধবার (২০ জুলাই) থেকে আদেশটি কার্যকর হবে। এ ব্যাপারে প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া জানান, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই চবিতে ছাত্রী হলে প্রবেশের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই না আর কোনো ছাত্রী নির্যাতনের শিকার হোক। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখভাল করব।’
উল্লেখ্য, নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী। তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।