পেঁয়াজ খেলে কমবে ডায়াবেটিস!

বাঙালির প্রতিদিনের রসনাবিলাসে পেঁয়াজ কমবেশি থাকেই। বিশেষ করে প্রতিদিনের তরকারিতে পেঁয়াজ না হলে যেন রান্নাই হয় না। এই পেঁয়াজ রান্নার স্বাদকে যেমন অতুলনীয় করে, ঠিক তেমনি এর রয়েছে নানা উপকারিতা। আমরা জানি, পেঁয়াজ চুলের জন্য কতটা উপকারী। চুল পড়া বন্ধ করতে এমনকি নতুন চুল গজাতেও এই পেঁয়াজের বিকল্প নেই! তবে কেবল চুল নয়! পেঁয়াজের রস কমায় ডায়াবেটিস। এমনটাই দেখা গেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। সেই গবেষণা মতে, পেঁয়াজের রস রক্তে শর্করার মাত্রা ৫০ শতাংশ কমাতে সহায়তা করতে পারে।
যেহেতু টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের অগ্ন্যাশয় থেকে রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে সক্ষম হয় না। তাই বলা যায় পেঁয়াজের রস এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।
এই নতুন গবেষণাতে জানা যায়, পেঁয়াজের রস উচ্চ রক্তে শর্করাকে দৃঢ়ভাবে কমাতে পারে। কেবল মাত্র তাই নয় এই পেঁয়াজের রস উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমাতে পারে।
এই বিষয়ে নাইজেরিয়ার আবরাকাতে ডেল্টা স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রধান ও অধ্যয়নের লেখক অ্যান্টনি ওজিহ জানান, ‘পেঁয়াজ সস্তা ও সহজলভ্য। এটি একটি পুষ্টির সম্পূরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসায় পেঁয়াজের ব্যবহার বেশ কার্যকরী।’
আরও পড়ুন# কীভাবে চিনবেন প্রকৃত ভালোবাসার মানুষকে!
গবেষকরা মূলত এই গবেষণাটি ইঁদুরের ওপর করবছে। তারা মোট তিন গ্রুপের ইঁদুরের মধ্যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজের নির্যাসের বিভিন্ন ডোজ হিসাবে ব্যবহার করেছেন। শরীরের ওজন হিসেবে সেই ডোজগুলো ছিল ২০০ মিলিগ্রাম, ৪০০ মিলিগ্রাম ও ৬০০ মিলিগ্রাম। ওই গবেষকের দলটি ডায়াবেটিক ও ননডায়াবেটিক ইঁদুরের তিনটি গ্রুপকে ওষুধ ও পেঁয়াজ একসাথে দিয়েছিলেন। আর এর পরবর্তী ফলাফল দেখে তারা বেশ অবাক হন।
গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিক ইঁদুরদের মধ্যে, যাদের শরীরের ওজন প্রতি কিলোগ্রামে ৪০০ মিলিগ্রাম ও ৬০০ মিলিগ্রাম দেওয়া হয়েছিল তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা একটি বেসলাইন স্তরের তুলনায় যথাক্রমে ৫০ শতাংশ ও ৩৫ শতাংশ কমেছে। এছাড়াও পেঁয়াজের রস ডায়াবেটিক ইঁদুরের মোট কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমিয়েছে, যেখানে ৪০০ মিলিগ্রাম ও ৬০০ মিলিগ্রাম সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, পেঁয়াজের রস ননডায়াবেটিক ইঁদুরদের মধ্যে ওজন বাড়ালেও ডায়াবেটিক ইঁদুরদের মধ্যে বাড়ায়নি।
ওই গবেষণা অনুসারে বলা যায়, পেঁয়াজ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করবে বা কমাবে। তবে, এখনো ওই গবেষণাটি মানুষের ক্ষেত্রে ট্রায়াল দেওয়া হয়নি। দেওয়া হলে তা হয়তো মানুষের জন্যও বেশ প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।